আল-আকসায় অনড় ফিলিস্তিনিরা, অস্ত্রের মুখেও ‘নড়বো না’
অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের পবিত্র আল-আকসা মসজিদে এবারের রমজানেও ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলে পড়েছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে একাধিকবার মুসলিমদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে তারা। ছুড়েছে রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস, লাঠিপেটা করা হয়েছে নিরস্ত্র মুসল্লিদের। কিন্তু এত সহিংসতার মধ্যেও একবিন্দু ভয় নেই সাহসী ফিলিস্তিনিদের, দখলদার অস্ত্রের সামনেই বুক চিতিয়ে দাঁড়াচ্ছেন তারা। ইহুদি দখলদারদের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিবাদের নতুন ভাষা হয়ে উঠেছে ‘নড়বো না’।
পূর্ব জেরুজালেমে ইসরায়েলি দখলদারদের সামনে ফিলিস্তিনিদের অনড় অবস্থানের বেশ কিছু ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে। একটি ভিডিওতে সশস্ত্র ইসরায়েলি সৈন্যের চোখে চোখ রেখে তাকিয়ে থাকা এক ফিলিস্তিনি তরুণীর বিদ্বেষপূর্ণ দৃষ্টিই যেন বলে দিচ্ছে, ‘নট বাজিং’ অর্থাৎ নড়বো না।
এই শব্দটি মূলত কিফাহ জারাইকির একটি জনপ্রিয় ফিলিস্তিনি গান থেকে এসেছে, যার নাম ‘আনা ইবনে ইল-কুদস’ বা ‘আমি জেরুজালেমের সন্তান’। ফিলিস্তিনে এটি এখন ট্রেন্ডিং। ওই গানে জারাইকি বলেছেন, আমি জেরুজালেমের সন্তান, আমি নড়ছি না। আমি এখানেই থাকছি।
মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) পবিত্র আল-আকসা মসজিদে ইসরায়েলি তাণ্ডবে দেড়শ জনের বেশি আহত হলে আবারও ফুঁসে ওঠেন ফিলিস্তিনিরা। তাদের ওপর রাবারের প্রলেপ দেওয়া ধাতব বুলেট, কাঁদানে গ্যাস, স্টান গ্রেনেড ছোড়ে দখলদার বাহিনী, পেটানো হয় নির্দয়ভাবে। সেদিন কয়েক হাজার মুসল্লি পবিত্র মসজিদটিতে ফজরের নামাজ পড়তে সমবেত হয়েছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আনাদোলু এজেন্সিকে বলেছেন, ইসরায়েলি বাহিনী মুসল্লিদের ধাওয়া করে এবং মসজিদের উঠানে ফেলে তাদের মারধর করা হয়।
কিন্তু এসবের মধ্যেও বেশ কিছু ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। একটিতে দেখা যায়, একদল সশস্ত্র ইসরায়েলি সৈন্যের সামনে শান্ত ভঙ্গিতে শুয়ে রয়েছেন এক ফিলিস্তিনি।
সাদা দাড়ি ও লম্বা পাঞ্জাবি পরা আরেক ফিলিস্তিনিকে দেখা যায় পায়ের ওপর পা তুলে বসে থাকতে। তার চারপাশে তখন টহল দিচ্ছিল অস্ত্রধারী ইসরায়েলিরা।
এমনকি একটি শিশুকে দখলদারদের সামনে রাস্তায় বসে পবিত্র কোরআন শরিফ তেলাওয়াত করতেও দেখা গেছে। ভিডিওটি শেয়ার করে অ্যারাবিক পোস্টের জ্যেষ্ঠ প্রযোজক খায়ের এদ্দিন আলজাবরি টুইটারে লিখেছেন, সাহসী হৃদয়ের অধিকারী আরেক বজ্র। জেরুজালেমের শিশুটি বসতি স্থাপনকারীদের চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আল-আকসা মসজিদের পথে বসে রয়েছে।
১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনি ভূমি অবৈধভাবে দখলের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় ইহুদিরাষ্ট্র ইসরায়েল। এর ধারাবাহিকতায় ১৯৬৭ সালে আরবদের সঙ্গে যুদ্ধে আল-আকসা মসজিদ দখল করে নেয় তারা। যুদ্ধের পর আল-আকসা পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছিল দখলদাররা। এমনকি ১৯৬৯ সালে পবিত্র মসজিটিতে অগ্নিসংযোগও করেছিল তারা। এরপর নানা বিধিনিষেধ আর শর্তপূরণের মাধমে সেখানে ইবাদতের সুযোগ পেতেন সাধারণ মুসল্লিরা।
এরপরও একাধিকবার বিভিন্ন অজুহাতে দখলদার ইসরায়েল আল-আকসা মসজিদটি ফিলিস্তিনিদের জন্য বন্ধ করে দেয়। ২০০৩ সালে জেরুজালেমে অবৈধ বসতি স্থাপনকারী ইহুদিদের আল-আকসায় প্রবেশের অনুমতি দেয় ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে আবারও দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়।
আল-আকসা বা বায়তুল মুকাদ্দাস ছিল মুসলিমদের প্রথম কেবলা। অসংখ্য নবি-রাসুলের স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক স্থান ও মর্যাদপূর্ণ ইবাদতের জায়গা এটি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঐতিহাসিক মেরাজের রাতে মসজিদুল হারাম তথা কাবা শরিফ থেকে মসজিদুল আকসা তথা বায়তুল মুকাদ্দাসেই প্রথম সফর করেন।
এটি আবার ইহুদিদের কাছে টেম্পল মাউন্ট হিসেবে পরিচিত। তাদের দাবি, এর নিচেই রয়েছে দুটি প্রাচীন ইহুদি মন্দির। খ্রিস্টানরাও স্থাপনাটিকে তাদের পবিত্র স্থান বলে দাবি করে আসছে। সূত্র: অনলাইন।
Saturday, April 23, 2022
আল-আকসায় অনড় ফিলিস্তিনিরা, অস্ত্রের মুখেও ‘নড়বো না’
Tags
# International
About sarabela.online
International
Labels:
International
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Post Top Ad
Author Details
Welcome, It's a site of SS Connections Site. Templatesyard is a blogger resources site is a provider of high quality blogger template with premium looking layout and robust design. The main mission of templatesyard is to provide the best quality blogger templates which are professionally designed and perfectlly seo optimized to deliver best result for your blog.Thanks.
No comments:
Post a Comment